ভূমিকাঃ (Introduction)
1823 খ্রিস্টাব্দে “General Committee of public Instruction” (GCPI) নামে বাংলাদেশে একটি শিক্ষা সংস্থা গঠিত হয়েছিল। সনদ আইনে বরাদ্দ এক লক্ষ টাকার যথাযথ সদ্বব্যবহারের দায়িত্ব এই কমিটির হাতে দেওয়া হয়। উক্ত সমিতির সদস্যগণ প্রথম দিকে প্রাচ্যশিক্ষার পক্ষপাতি ছিলেন এবং তারা প্রাচ্যশিক্ষার উন্নয়নেই মন দিয়েছিলেন। ভারতে যখন ইংরেজি শিক্ষার চাহিদা তীব্র হয়ে উঠল তখন কমিটির সদস্যরা সমান দু- ভাগে বিভক্ত হলেন। ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার পক্ষপাতি ছিলেন HT Prinsep, wilson সহ কোম্পানির তরুণ কর্মচারীরা। কমিটির ভিতরের সদস্যগণ ভাষার মাধ্যম সম্বন্ধে পৃথক মত পোষণ করায় একদল ‘প্রাচ্যপন্থী’ (orientalist) এবং আর-একদল ‘পাশ্চাত্যপথী’ (occidentalist) নামে দুটি দলে বিভক্ত হলেন। এই দ্বন্দ্ব ক্রমে এতই তীব্র আকার ধারণ করেছিল যে, সমিতির কাজ একেবারে বন্ধ হয়ে গেল।
সেই সময় ভারতের বড়োলাট ছিলেন লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক 1834 খ্রিস্টাব্দের 10ই জুন তারিখে লর্ড মেকলে বড়োলাট লর্ড বেন্টিঙ্কের আইন সদস্য হিসেবে ভারতবর্ষে এসে পৌঁছোলেন। অল্পদিনের মধ্যেই তিনি শিক্ষা কাউন্সিলের সভাপতি পদে নিযুক্ত হন। লর্ড বেন্টিঙ্ক লর্ড মেকলের ওপর এই বিতর্কের নিষ্পত্তির ভার দেন। লর্ড বেন্টিঙ্ক তাঁকে 1813 খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনের 43নং ধারাটির এক আইনসংগত ব্যাখ্যা করে এই বিরোধের মীমাংসা করতে অনুরোধ করলেন।
মেকলে মিনিট বিবরণী (1835 খ্রিস্টাব্দ)
তৎকালীন বড়োলাট লর্ড বেন্টিঙ্ক কর্তৃক ভারপ্রাপ্ত হয়ে লর্ড মেকলে 1835 খ্রিস্টাব্দের 2 ফেব্রুয়ারি দীর্ঘ বিবরণী প্রকাশ করলেন। এই বিবরণী ( Minute) ভারতীয় শিক্ষাক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক বিবরণী বলে পরিগণিত হয়ে আছে। মেকলে সাহেবের মিনিটে ইংরেজি ভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম করার প্রস্তাব বলিষ্ঠভাবে সমর্থন লাভ করেছিল।
লর্ড মেকলের বিবরণীর প্রধান বক্তব্যগুলি ছিল— (i) ইংরেজি ভাষার মাধ্যমেই শিক্ষা দিতে হবে।
(ii) পুরোনো অকেজো দেশীয় বিদ্যালয়গুলি বন্ধ করে দিতে হবে।
(ii) নতুন যুগের নতুন শিক্ষার উপযুক্ত স্কুল-কলেজ খুলতে হবে। মেকলে সাহেব তাঁর ঐতিহাসিক বিবরণীতে সর্ব প্রথমে 1813 খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনের 43নং ধারার ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন।
- তাঁর মতে ‘সাহিত্য’ বলতে ইংরেজি সাহিত্যের কথা বোঝায়, ‘শিক্ষিত ভারতবাসী’ বলতে সেই ভারতবাসীর কথা বলা হয়েছে যাঁরা লক সাহেবের দর্শন, মিলটন সাহেবের