ভারতের রাজনীতিতে বিভিন্ন আঞ্চলিক দলগুলির উদ্ভব ও ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।

ভারতীয় রাজনীতিতে আঞ্চলিক দলের অস্তিত্ব কোন নতুন ঘটনা নয়। বর্তমানে এই আঞ্চলিক দলগুলি গন সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। কোন বড় রাজনৈতিক (কংগ্রেস ও বি.জে.পি.) দলের পক্ষে মানে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য আঞ্চলিক দলগুলির অর্থন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। আঞ্চলিক দলগুলির উদ্ভবের পেছনে অনেকগুলি কারণ আছে। কারণগুলি হল অরূপ

) আঞ্চলিক দলের উদ্ভবের কারণ : ভারতীয় রাজনীতিতে আঞ্চলিক দলের অস্তিত্ব কোন নতুন ঘটনা না। আঞ্চলিক দলগুলির উদ্ভবের পেছনে কিছু কারণ অনুসন্ধান করা যায়।

(১) জাতীয়স্তরে যেসব প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও উন্নয়ন পরিকল্পনা গৃহীত হয় তাতে অঞ্চলের অধিবাসীরা সকল নয় সন্তুষ্ট হতে পারে না। আঞ্চলিক স্বার্থ ও সমস্যার সমাধান প্রচেষ্টা কোন কোন সময় অঞ্চলের অধিবাসীদের য়ে ক্ষোভ সৃষ্টি করে। আঞ্চলিকস্তরের এইসব ধ্যান ধারণাকে কেন্দ্র করে আঞ্চলিক দলের উদ্ভব ঘটেছে। তামিলনাড়ুর ই. এম. কে. এ. আই. এ. ডি. এম. কে দলের সৃষ্টি এভাবেই হয়েছে।

 

(২) ভারতে এখনও জাত-পাত, ধর্মীয় ভাবাবেগ বর্তমান। জাতি, গোষ্ঠী বা ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের জাতিগত ধর্মীয় আনুগত্যের ভিত্তিতে আঞ্চলিক সাম্প্রদায়িক দল গড়ে উঠেছে। হিন্দু মহাসভা, মুসলীম লীগ, তেলেগু

শিম, বিশ্বহিন্দু পরিষদ প্রভৃতি এভাবেই সৃষ্টি হয়েছে।

(৩) ভাষাগত ভিত্তিতেও ভারতে আঞ্চলিক দলের উদ্ভব ঘটেছে। ডি. এম. কে. এ. আই. এ. ডি. এম. কে দল

দুলা ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে। তৃণমূল কংগ্রেস (T.M.C):

১৯৯৮ সালের দ্বাদশ লোকসভা নির্বাচনের পূর্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর নেতৃত্বে কংগ্রেসের এক অংশ কংগ্রেস ত্যাগ করে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস দল গঠন করে। ঐ লোকসভা নির্বাচনে এই দল ৭টি আসন লাভ করে এবং ১৯৯৯ সালের প্রয়োদশ নির্বাচনে এই দল ৮টি আসন লাভ করে। এই দল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং মলের সহযোগী ছিল কিন্তু ২০০১ সালে তেহেলকা ইস্যুতে এই দল এন.ডি.এ. থেকে বেরিয়ে যায়। এই 200 সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। নির্বাচনে ফল খারাপ করার পর এই দল আবার এন.ডি.এ. জোটে ফিরে যায়। সম্প্রতি (৮ই জুন, ২০০৩) অনুষ্ঠিত পশ্চিমবঙ্গের নবদ্বীপ লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস বিরাট ব্যবধানে (১৮ হাজার ৮০০) সিপিআই(এম) প্রার্থীর কাছে পরাজিত হওয়ার লোকসভার একটি আসন হারিয়েছে। চতুর্দশ লোকসভা নির্বাচনে এই দলের আসন সংখ্যা হল ১টি।

তেলেও দেশন ভারতীয় শাসন ব্যবস্থায় আঞ্চলিক বৈচিত্র্য এবং আঞ্চলিক অভাব অভিযোগ, স্বার্থের ভিত্তিতে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের উদ্ভব ঘটেছে। এই রাজনৈতিক দলগুলির জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছে।

  • ডি.এম.কে এ.আই.এ.ডি.এম.কেঃ

আমি স্বাজাত্যবোধ ও আবেগ ঘিরে দক্ষিণভারতে এই দুটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল রাজ্য রাজনীতিতে শুধু ােতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রেও নিজস্ব ভূমিকা গ্রহণ করেছে। ১৯৬৭ সাল থেকে ডি.এন. কে. (Dravida Mimnetra Sagar) এবং পরবর্তী পর্যায়ে এ. আই. ডি.এম.কে (All India Anna Dravida Munnetra Kazhagham) দিতির মুখ্য নিয়ন্ত্রক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ব্রাহ্মণ্যবাদ বিরোধী উত্তর ভারত বিরোধী তামিল ভাষার প্রাধান্য জন্যে আন্দোলনের প্রকাশ হিসাবে ডিএমকে দলের আবির্ভাব বলা যায়। ১৯৩৮ সালে ‘পেরিয়ার’ (E. wami Naicker) প্রথম রাজনীতির তামিলীকরণ’ (Tamilisation of politics) কর্মসূচীর সুত্রপাত সে এবং প্রাণিজস্থান ও পৃথক তামিল রাজ্য গঠনের আন্দোলনের শুরু করেন। দ্বাবিড় ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সংরক্ষণের এই স্বতন্ত্র প্রাবিড়ভূমি গঠনের প্রয়োজন বলে দাবী করা হয়।

 

পাঞ্জাবের আকালী দলকে শিখ স্বাজাত্যবোধের প্রতীক হিসাবে গণ্য করা যায়। শিখ গুরুদ্বারা সংস্কার কমিটি ১৯২০ সাল থেকেই পাঞ্জাবী ভাষা, সংস্কৃতি ও ধর্ম-এর সতজ্ঞা রক্ষার জন্যে আন্দোলন শুরু করে। দীর্ঘ আন্দোলনের পর ১৯৫৬ সালে শিখ-সংখ্যাগরিষ্ঠতাসহ পাতার রাজ্য সংগঠিত হয়। কিন্তু পাঞ্চাবের সঙ্গে হরিয়ানা অঙ্গরাজ্য গঠনের ফলে চণ্ডীগড় নিয়ে সমস্যা থেকে যায়। পাঞ্জাব, হরিয়ানা রাজস্থানের মধ্যে নদী জল বর্ণনের বিষয়টি অমীমাংসিত থেকে যায়। আকালী দলের মধ্যের নানা গোষ্ঠীর জন্ম দেখা দেয়। শিখদের অভাব-অভিযোগ ও অন্যান্য সমস্যা সমাধানে কেন্দ্রীয় সরকারের সহানুভূতিহীন দৃষ্টিভঙ্গী এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতা, অব্যবস্থা খালিস্তান আন্দোলনের সূত্রপাত করে। জঙ্গী শিখ সন্ত্রাসবাদীরা বছরের পর বছর দাবী আদায়ের জন্যে নির্বিচারে হত্যা

কেন্দ্রীয় সরকার শিখ সন্ত্রাসবাদ দমন করে পান্নাকে শান্তিশৃঙ্খলার পরিবেশ কিছুটা প্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ হয়েছে বলা যায়। কিন্তু মূল সমস্যার এখনও সমাধান হয় নি। রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল এবং জাতিগত ভাবনা রক্ষার সমস্যা এখনও বর্তমান। পাঞ্জাবে শিখ সম্প্রদায় সামান্য হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ। আকালীদের মধ্যেও নানাগোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব করেছে। সুতরাং শিখ সম্প্রদায়ের সম্প্রদায় ও বর্ণগত বিভেদ পাঞ্জাব রাজ্যের সমস্যা সমাধানের পথে বন বাধা। অ- (Nou Jat) শিখরা হিন্দুদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কেন্দ্রীয় ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের সঙ্গে সহ সম্পর্ক গড়ে তোলে। ১৯৬৬ সালে আকালী দল প্রতিষ্ঠার পরে আকালী দল কিছু সময় রাজ্যে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। আবার কোয়ালিশন সরকার গঠন করে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে। জনসমে এবং জনতা দলের সঙ্গে সমঝোতা করে আকালী দল পাঞ্জাব রাজ্য রাজনীতিতে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে। বর্তমানে শিরোমণি আকালী দল কেন্দ্রের ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সহযোগিতায় রাজ্য সরকার পরিচালনা করছে। দ্বাদশ লোকসভা (১৯৯৮) নির্বাচন এবং ত্রয়োদশ লোকসভা নির্বাচন (১৯৯৯) শিরোমণি আকালী দল যথাক্রমে ৮টি ও ২টি করে আসন করেছিল। ২০০৪ সালের চতুর্দশ লোকসভা নির্বাচনে এই দল ৮টি আসন লাভ করেছে। জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের শরিক হিসাবে দল কাজ করছে। অসম গণপরিষদ

আসন গণপরিষদ একটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল হিসাবে ৮০-র দশকে প্রতিষ্ঠিত হয়। অসমে বহিরাগত সমস্যা। “অসম অসমীয়াদের জন্যে এই দাবীর জন্যে অসমে হিংসাত্মক ছাত্র আন্দোলন সংগঠিত হয়। পরবর্তী অধ্যায়ে অসমে প্রশাসনিক ব্যবস্থায় এবং রাজ্যের অর্থনীতিতে বাঙালী আধিপত্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠিত হয়। স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষ অসমে বসবাস করতে শুরু করে। ১৯৭১ সালে এই সব ‘বহিরাগতদের’ ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলন ব্যাপক হিংসাকে রূপ নেয়। কেন্দ্রীয় কংগ্রেস সরকারের নিজের প্রাধান্য বজায় রাখার জন্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আসামের সমস্যা সমাধানে বার্থ হয়। ১৯৮৫ সালে ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বের সঙ্গে কংগ্রেস সরকারের চুক্তির মাধ্যমে বিদেশী চিহ্নিতকরণের বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা হয়। ১৯৮৫ সালের লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে অসম গণপরিষদ (অগপ) বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা লাভ করে।

ন্যাশনাল কনফারেন্স : ভারতীয় রাজনীতিতে আঞ্চলিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্স এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনে ন্যাশনাল কনফারেন্স-এর প্রবাদপ্রতিম নেতা শেখ আবদুল্লা দেশীয় রাজন্যবর্গের বিরুদ্ধে জনগণের আন্দোলন পরিচালনা করেন। জম্মু ও কাশ্মীরের বর্তমান সংকটাপন্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে ঐতিহাসিক

তার মূল্যায়ন প্রয়োজন। ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতৃত্বে জম্মু ও কাশ্মীর স্বাধীনতার সময়ে ভারতীয় ইউনিয়নে কালানে দৃঢ় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। শেখ আবদুয়া ও কাশ্মীরের জনগণ পাকিস্তানের পরিবর্তে ভারতীয় ইউনিয়নের প্রাকৃত হয় এবং পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সঙ্গে লড়াই সংগ্রাম চালায়। জম্মু ও কাশ্মীরের বর্তমান অবস্থা এ আক্রমণ, সন্ত্রাস এবং জঙ্গী বাহিনীর অনুপ্রবেশ সব কিছুর পেছনে কেন্দ্রীয় সরকারের এই রাজ্যের সমস্যা মাধনে ব্যর্থতার পরিচয় বহন করে।

 

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Our team dm developments north west. Saraswat bank co operative ltd. Telugu songs lyrics.