শেষের কবিতা
শেষের কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত একটি উপন্যাস। রবীন্দ্রনাথের চিত্রসৃষ্টি পর্যায়ের দ্বিতীয় উপন্যাস (প্রথমটি যোগাযোগ) এটি। ১৯২৭ সাল (১৩৩৪ বঙ্গাব্দের ভাদ্র) থেকে ১৯২৮ সাল (১৩৩৪ বঙ্গাব্দের চৈত্র) অবধি প্রবাসীতে ধারাবাহিকভাবে রচনাটি প্রকাশিত হয়।
কাব্য সৌন্দর্য
রবীন্দ্রনাথের শেষজীবনে ছবি আঁকার কালে কথাসাহিত্যের চিত্রধর্মে কিছু কিছু নূতনত্ব দেখা গেছে। কলমের স্বল্প আঁচড়ে বক্তব্যকে নিশ্চিতভাবে চোখের সামগ্রী করে তোলার এক বিশেষ ঝোঁক এবং সেই সঙ্গে দক্ষতা।
- ” অমিত বলে, ফ্যাশানটা হল মুখোশ, স্টাইলটা হল মুখশ্রী। ওর মতে, যারা সাহিত্যের ওমরাও দলের, যারা নিজের মন রেখে চলে, স্টাইল তাদেরই। আর যারা আমলা দলের, দশের মন রাখা যাদের ব্যবসা, ফ্যাশান তাদেরই। … কানাত হল ফ্যাশানের, বেনারসি হল স্টাইলের – বিশেষের মুখ বিশেষ রঙের ছায়ায় দেখবার জন্যে।”
- ” কমল-হীরের পাথরটাকে বলে বিদ্যে, আর ওর থেকে যে আলো ঠিকরে পড়ে ,তাকে বলে কালচার। পাথরের ভার আছে, আলোর আছে দীপ্তি।”
- ” সায়াহ্নের এই পৃথিবী যেমন অস্ত-রশ্মি-উদ্ভাসিত আকাশের দিকে নি:শব্দে আপন মুখ তুলে ধরেছে, তেমনি নীরবে, তেমনি শান্ত দীপ্তিতে লাবণ্য আপন মুখ তুলে ধরলে অমিতের নতমুখের দিকে।”
- ” সেইখানে পশ্চিমের দিকে মুখ করে দুজনে দাঁড়ালো। অমিত লাবণ্যের মাথা বুকে টেনে নিয়ে তার মুখটি উপরে তুলে ধরল। লাবণ্যের চোখ অর্ধেক বোজা, কোণ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে।