নাগরিকতা কাকে বলে নাগরিকতা অর্জনের পদ্ধতি গুলি সংক্ষেপে আলোচনা কর।

নাগরিকত্ব বা নাগরিকতা হল কোনো সার্বভৌম রাষ্ট্র বা জাতির একজন আইনস্বীকৃত সদস্য হিসেবে পাওয়া কোনো ব্যক্তির পদমর্যাদা। অন্যভাবে যেকোন অঞ্চলের অধিবাসীর সে অঞ্চলে বসবাস করার স্বীকৃতি ও তা স্বরূপ যেসব সুবিধা ও দায়িত্ব বর্তায় তার সামষ্টিকরূপকে নাগরিকতা বলে।

নাগরিকতা অর্জনের পদ্ধতি :- নাগরিকতা অর্জনের দুটি পদ্ধতি রয়েছে । যেমন- ক) জন্মসূত্র ও খ) অনুমোদন সূত্র ।


ক. জন্মসূত্রে নাগরিকতা অর্জনের পদ্ধতি : জন্মগ্রহণই যখন নাগরিকতা অর্জনের ভিত্তি হিসেবে ধরা হয় তখন তাকে জন্মসূত্রে নাগরিক বলা হয়। জন্মসূত্রে নাগরিকতা অর্জনের ক্ষেত্রে দুটি নীতি অনুসরণ করা হয় । যথা- ১ । জন্মনীতি ও ২ । জন্মস্থান নীতি ।
১. জন্মনীতি : এ নীতি অনুযায়ী পিতা-মাতার নাগরিকতা দ্বারা সন্তানের নাগরিকতা নির্ধারিত হয় । এ ক্ষেত্রে শিশু যে দেশে বা যেখানেই জন্মগ্রহণ করুক না কেন, পিতা-মাতার নাগরিকতা দ্বারা সন্তানের নাগরিকতা নির্ধারিত হয়। যেমন- বাংলাদেশের কোনো এক দম্পতি যুক্তরাজ্যে গিয়ে একটি সন্তান জন্ম দান করলেন । এ নীতি অনুসারে ঐ সন্তান বাংলাদেশের নাগরিকতা লাভ করবে। কারণ তার পিতা-মাতা বাংলাদেশের নাগরিক ।
২. জন্মস্থান নীতি : এ নীতি অনুযায়ী পিতা-মাতা যে দেশেরই নাগরিক হোক না কেন, সন্তান যে রাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করবে সে ঐ রাষ্ট্রের নাগরিকতা লাভ করবে। যেমন-কোনো বাংলাদেশি পিতা-মাতার সন্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করলে, সেই সন্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকতা লাভ করবে। এ ক্ষেত্রে নাগরিকতা নির্ধারণে রাষ্ট্রকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এ নীতি অনুযায়ী কোনো মা-বাবার সন্তান অন্য দেশের জাহাজ বা দূতাবাসে জন্মগ্রহণ করলেও জাহাজ বা দূতাবাস যে দেশের সে ঐ দেশের নাগরিক হবে । এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, জন্মসূত্রে নাগরিকতা প্রদানের ক্ষেত্রে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ জন্মনীতি অনুসরণ করে । বাংলাদেশ তার মধ্যে একটি। অন্যদিকে, আমেরিকা, কানাডাসহ অল্প কয়েকটি দেশ জন্মস্থান নীতির মাধ্যমে নাগরিকতা নির্ধারণ করে ।
অনুমোদন সূত্রে নাগরিকতা অর্জনের পদ্ধতি : কতগুলো শর্ত পালনের মাধ্যমে এক রাষ্ট্রের নাগরিক অন্য রাষ্ট্রের নাগরিকতা অর্জন করলে তাকে অনুমোদন সূত্রে নাগরিক বলা হয় । সাধারণত অনুমোদন সূত্রে নাগরিকতা অর্জনের ক্ষেত্রে যেসব শর্ত পালন করতে হয় সেগুলো হলো- ১) সেই রাষ্ট্রের নাগরিককে বিয়ে করা, ২) সরকারি চাকরি করা, ৩) সততার পরিচয় দেওয়া, ৪) সে দেশের ভাষা জানা, ৫) সম্পত্তি ক্রয় করা, ৬) দীর্ঘদিন বসবাস করা, ৭) সেনাবাহিনীতে যোগদান করা । রাষ্ট্রভেদে এসব শর্ত ভিন্ন হতে পারে ।
কোনো ব্যক্তি যদি এসব শর্তের এক বা একাধিক শর্ত পূরণ করে, তবে তাকে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হয়। আবেদন ঐ রাষ্ট্রের সরকার কর্তৃক গৃহীত হলে সে অনুমোদন সূত্রে নাগরিকে পরিণত হয় । বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রের নাগরিকরা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি রাষ্ট্রে অনুমোদন সূত্রে নাগরিকত্ব লাভের মাধ্যমে বসবাস করছে । তাছাড়া মানবিক কারণেও নাগরিকতা দেওয়া হয় । যেমন- কোনো ব্যক্তি যদি কোনো রাষ্ট্রে আশ্রয় নেয়, তবে সেই রাষ্ট্র তার আবেদনের ভিত্তিতে তাকে নাগরিকত্ব দিতে পারে ।

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

National building regulations (sa). Smita jewellers pen. January 2, 2024 dm developments north west.