অভীক্ষার যথার্থতার সংজ্ঞা দাও | যথার্থতার বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।

অভীক্ষার যথার্থতার সংজ্ঞা :-

অভীক্ষা হলো কতগুলো প্রশ্নের সমষ্টি যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে কারো জ্ঞান, দক্ষতা বা সামর্থ্য যাচাই করা যায়। অভীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও প্রশিক্ষণার্থীদের দক্ষতা মূল্যায়ন করা হয়।

আবার এভাবে বলা যায়, অভীক্ষা হলো কতগুলো প্রশ্ন, কাজ বা সমস্যার সমষ্টি যা প্রণয়ন করা হয়ে থাকে কোনো বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যক্তির জ্ঞান ও পারদর্শীতা যাচাই করার জন্য বা মূল্যায়ন করার জন্য।

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত পাঠ্যবইয়ে বলা হয়েছে, ‘পরীক্ষা গ্রহণের জন্য যে প্রশ্নপত্র বা কৌশল ব্যবহৃত হয় তাই হলো অভীক্ষা।’

বাংলা অভীক্ষা শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো টেস্ট (test)। ইংরেজি টেস্ট শব্দটির অনেকগুলো অর্থ থাকলেও এখানে অভীক্ষা বলতে ‘a series of questions, tasks or problems’ অথবা ‘a set of questions’ অথবা ‘a collection of questions or problems’ বোঝানো হয়েছে।

অভীক্ষার বৈশিষ্ট্য :-

একটি আদর্শ বা উত্তম অভীক্ষার কতকগুলো গুণ বা শর্ত থাকা উচিত। যে শর্তগুলো না থাকলে শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে বা নিখুঁতভাবে মূল্যায়ন করা সম্ভব হবে না।

অভীক্ষার এই শর্তগুলোকে বলা হয় অভীক্ষার বৈশিষ্ট্য। যে অভীক্ষায় এই বৈশিষ্ট্যগুলো খুঁজে পাওয়া যায় তাকে অনেকে বলে থাকেন সু-অভীক্ষা।

নিম্নে প্রধান অভীক্ষার (সু-অভীক্ষা) পাঁচটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলো। অভীক্ষার বৈশিষ্ট্যগুলো বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত পাঠ্যবই অনুকরণ করে লেখা হয়েছে।

একটি সু-অভীক্ষার প্রথম বৈশিষ্ট্য হলো যথার্থতা।

১. যথার্থতা :- কোনো অভীক্ষা যে উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হয়, ওই অভীক্ষা যদি সেই উদ্দেশ্য পূরণ করে তাহলে তাকে অভীক্ষার যথার্থতা বলে। অর্থাৎ, শিক্ষার্থীর যে বিশেষ গুণ বা বৈশিষ্ট্য পরিমাপ করার জন্য অভীক্ষা প্রণয়ন করা হবে, অভীক্ষাটি যদি শুধু তাই পরিমাপ করে, তবে অভীক্ষাটি যথার্থ বলা যায়।

যে ধরনের অভীক্ষালব্ধ স্কোর থেকে সু-নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তগ্রহণের যথোপযুক্ততা, অর্থপূর্ণতা ও কার্যোপযোগিতা না থাকলে তাকে যথার্থতা বলা যায় না।

যেমন, সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে কোনো কিছু যাচাই করতে গেলে সেখানে সাধারণ বিজ্ঞান থেকে প্রশ্ন করা যথার্থ নয়।

২. নির্ভরযোগ্যতা : অভীক্ষার নির্ভরযোগ্যতা বলতে বোঝায় কোনো একটি অভীক্ষা কতটা নির্ভূল ও সঙ্গতিপূর্ণ ফলাফল প্রদান করতে পারে তাকে। যদি একটি অভীক্ষা একদল শিক্ষার্থীর উপর কিছুদিনের ব্যবধানে পর পর দু’বার প্রয়োগ করা হয় এবং যদি দেখা যায় যে, শিক্ষার্থীদের দুই বারের ফলাফলের মধ্যে মিল আছে, তাহলে অভীক্ষাটির নির্ভরযোগ্যতা রয়েছে বলে বিবেচনা করা যাবে। অভীক্ষার নির্ভরযোগ্যতা গাণিতিক পদ্ধতিতে নির্ণয় করা যায়।

৩. নৈর্ব্যক্তিতা :- অভীক্ষার নৈর্ব্যক্তিকতা বলতে বোঝায় অভীক্ষাটির প্রস্তুতি, প্রয়োগ ও নম্বর প্রদানের ক্ষেত্রে পরীক্ষকের ব্যক্তিগত প্রভাব পড়বে না। যদি কোনো অভীক্ষার আওতায় পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করার প্রক্রিয়ায় পরীক্ষকের ব্যক্তিগত প্রভাব পড়ে তাহলে তাকে নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষা বলা যাবে না এবং ওই অভীক্ষা সু-অভীক্ষা বলে বিবেচিত হবে না।

৪. আদর্শায়িত :- আদর্শ হলো কোনো বিশেষ গঠন, প্রক্রিয়া, প্রয়োগ বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের সাথে সঙ্গতিবিধানের লক্ষ্যে পূর্বনির্ধারিত কোনো সাধারণ বৈশিষ্ট্য। আবার আদর্শায়ন হলো পূর্বানির্ধারিত কোনো বৈশিষ্ট্যের সাথে সঙ্গতিবিধানের কলাকৌশল।

অভীক্ষার গঠন, প্রয়োগ ও ফলাফল ব্যাখ্যার মধ্যে পূর্বনির্ধারিত কোনো সাধারণ বৈশিষ্ট্যের সাথে সঙ্গতিবিধানের ক্ষেত্রে যে কৌশল অনুসরণ করা হয়, তাকে অভীক্ষার আদর্শায়ন বলে। আদর্শায়িত অভীক্ষার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এর একটি আদর্শ স্কোর, মান বা নম্বর নির্ণয় করা হয় এবং এ মানের নিরিখে ফলাফলের ব্যাখ্যা করা হয়।

৫. পরিমিততা :- অভীক্ষার পরিমিততা বলতে বোঝায় অভীক্ষাটির গঠন, প্রয়োগ এবং নম্বর প্রদানের ব্যাপারে যতটা সম্ভব কম সময়, অর্থ ও পরিশ্রম ব্যয় হয়। যে অভীক্ষার প্রয়োগে ও ফলাফল প্রদানে অনেক সময় ও অর্থ ব্যয় হয় সে অভীক্ষার পরিমিততা কম বলা চলে।

আবার যে প্রকৃতির অভীক্ষা প্রস্তুত করা হলো তা যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উত্তর প্রদান করা সম্ভব না হয় তাহলে সে অভীক্ষাকেও সু-অভীক্ষা বলে ধরা যাবে না।

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Garden rooms & out buildings dm developments north west. Shirish mankawale welcome to bhogeshwari developers, a leading real estate company that specializes in…. Touching touching song lyrical video | japan (telugu)| south film.