বিষয়ীর (উপমানের) সিদ্ধ অধ্যবসায় হলে, অর্থাৎ উপমান উপমেয়কে সম্পূর্ণরূপে গ্রাস করে ফেললে এবং সেই কারণে উপমেয়ের কোনো উল্লেখ না থাকলে যে অর্থসৌন্দর্যের সৃষ্টি হয়, তারই নাম সাধারণ অতিশয়োক্তি। অতি সহজ ভাবে বললে, উপমেয় লুপ্ত এবং উপমান প্রবল হলে তখন তাকে অতিশেয়োক্তি বলে।
উদাহরণ : (i)মুকুতামণ্ডিত বুকে নয়ন বর্ষিল
উজ্জ্বলতর মুকুতা! —মধুসূদন (মেঘনাদবধকাবা/৬ষ্ঠ গ)
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা : নিকুম্ভিলা যজ্ঞস্থলের দিকে পা বাড়ানো মেঘনাদের বিদায়-মুহূর্তের একটি করুণ দৃশ্য উদ্ধৃত উদাহরণটি। বেদনার্ত প্রমীলার ক্রন্দন-দৃশ্য। নয়ন থেকে অশ্রুধারাই তো বর্ধিত হল। কিন্তু অশ্রু এখানে অনুপ্ত। প্রমীলার নয়ন বা বর্ষণ করল, কবির চোখে তা ‘মুকুতা’। তারই উল্লেখ এখানে আছে।
অর্থাৎ, প্রকৃত বা উপমেয় ‘অশ্রু’-র উল্লেখ নেই, আছে কেবল অপ্রকৃত বা উপমান ‘মুকুতা’র (মুস্তা) উল্লেখ। অতএব, অলংকার এখানে অতিশয়োক্তি (বিশেষ নাম ‘রূপকাতিশয়োপ্তি)।