Make an assessment of the contribution of Martin Luther to the relative success of the reformation in Germany | জার্মানীতে সংস্কারবাদী আন্দোলনের আপেক্ষিক সাফল্যে মার্টিন লুথারের অবদান মূল্যায়ন করো | মার্টিন লুথারের নেতৃত্বে ধর্মসংস্কার আন্দোলনের পরিচয় দাও।

মার্টিন লুথার ছিলেন জার্মানির উইটেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মতত্বের অধ্যাপক। তিনি অগস্টাইন ভ্রাতৃসংঘের সদস্যপদ গ্রহণ করে সন্ন্যাসীর জীবন গ্রহণ করেন। ১৫১০ খ্রিটাব্দে রোমে গিয়ে ক্যাথলিক ধর্মের ধর্মগুরু পোপ ও যাজকদের বিলাস ব্যাসন ও দুর্নীতি দেখে তার চার্চ সম্পর্কে মোহভঙ্গ ঘটে। এরপর তিনি দেশে ফিরে পবিত্র বাইবেলের আদর্শে নতুন করে ধর্ম সংক্রান্ত পঠন পাঠন শুরু করেন। এর ফলে তিনি জানতে পারেন অন্তরের বিশ্বাসই মানুষের জীবনের মূল ভিত্তি।

(১) জার্মানিতে ক্ষমাপত্র বিক্রি : এই সময় রোমের সেন্ট পিটার্স গির্জা সংস্কারের জন্য অর্থ আদায়ের উদ্দেশ্যে পোপ তার প্রতিনিধি হিসেবে টেটজেল নামে এক যাজককে নিযুক্ত করেন। পোপ প্রচার করেন যে তার স্বাক্ষরিত ক্ষমাপত্র বা পাপ মুক্তিপত্র কিনলে মানুষ সকল পাপ থেকে মুক্ত হতে পারবে। টেটজেল জার্মানিতে এহ ক্ষমাপত্র বিক্রি করতে শুরু করেন। মার্টিন লুথার এর তীব্র প্রতিবাদ জানান।

(২) পঁচানব্বই গবেষণাপত্র : মার্টিন লুথার প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন ক্ষমাপত্র বিক্রি করে চার্চ অন্যায়ভাবে সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে অর্থ আদায় করছে। তিনি আরও বলেন অনুতাপই হচ্ছে পোপের প্রকৃত প্রায়শ্চিত্ত। অনুতপ্ত চিত্তে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেই পাপ মুক্ত হয়, এজন্য চার্চের দ্বারস্থ হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। ধর্মের নামে এই অনাচারের প্রতিবাদে লুথার ১৫১৭ খ্রিস্টাব্দের ৩১ অক্টোবর ক্ষমাপত্রের বিরুদ্ধে ৯৫ দফা অভিযোগপত্র ইউটেনবার্গ গির্জার দরজায় টাঙিয়ে দেন। এটি পঁচানব্বই গবেষণাপত্র নামে পরিচিত।

(৩) মতবাদ : মার্টিন লুথার খ্রিস্টধর্মের মূল নীতিকে ব্যাখ্যা করে ১৫২০ খ্রিস্টাব্দে ‘ব্যাবিলোনিয়ান ক্যাপটিভিটি’ নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন। এই গ্রন্থে তিনি পোপকে ধর্মগুরু বলে মানতে অস্বীকার করেন। বাইবেলকে তিনি খ্রিস্টানদের একমাত্র ধর্মগ্রন্থ বলে ঘোষণা করে বাইবেল অনুযায়ী সম্পত্তিতে সকলের সমান অধিকারের কথা বলেন। তার এই গ্রন্থটিতে ‘দ্বিতীয় বাইবেল’ বলা হয়। পোপর বিরুদ্ধে তার এই মতামত প্রচারিত হওয়ায় পোপ ক্ষুব্ধ হয়ে লুথারকে চার্চ থেকে বহিষ্কার করেন। লুথার প্রকাশ্যে পোপের নির্দেশটি পুড়িয়ে দেন।

(4) প্রোটেস্ট্যান্ট আন্দোলন : মার্টিন লুথার প্রচলিত ধর্মের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করে যে ধর্মসংস্কার আন্দোলন পরিচালিত করেছিলেন তা প্রোটেনস্ট্যান্ট আন্দোলন নামে পরিচিত হয় এবং তার ধর্মমত প্রোটেস্ট্যান্ট বা প্রতিবাদী ধর্ম নামে অভিহিত হয়।

(৫) খ্রিস্টধর্মের বিভাজন: এমতাবস্থায় পোপ দশম লিও ও রোমান সম্রাট পঞ্চম চার্লস ১৫২১ খ্রিস্টাব্দে ওয়ার্মস শহরে একটি ধর্মসভা আহ্বান করে মার্টিন লুথারকে তার ধর্মবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধ করতে নির্দেশ দেন। কিন্তু লুথার তার মতবাদে অবিচল থাকায় তাঁকে পুড়িয়ে মারার নির্দেশ দেওয়া হয়। সৌভাগ্যক্রমে স্যাক্সনির রাজা ফ্রেডারিক লুথারকে আশ্রয় দিলে পোপ ও সম্রাটের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হল না। ক্রমে তার মতবাদ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে খ্রিস্টান জগৎ দুইভাগে ভাগ হয়ে যায়। লুথাপন্থীরা পরিচিত হয় প্রোটেস্ট্যান্ট নামে। আর পোপের অনুগামীরা পরিচিত হয় রোমান ক্যাথলিক নামে।

মূল্যায়ন : জার্মানি থেকে ধর্মসংস্কার আন্দোলন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন দেশের মানুষ যেমন—ডেনমার্ক, নরওয়ে, সুইডেন, ইংল্যান্ড প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্ম গ্রহণ করে। এভাবে ধর্মসংস্কার আন্দোলনের অন্যতম পুরোহিত, মানবতাবাদী ও চরম প্রতিবাদী নেতা রূপে মার্টিন লুথার স্মরণীয় হয়ে আছেন।

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

National building regulations (sa). Explore your city business guide– . Hand tools dm developments north west.