ভারতের মূল সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ে সাত রকমের মৌলিক অধিকারের উল্লেখ ছিল। ১৯৭৮ সালের ৪৪ তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে সম্পত্তির অধিকার মৌলিক অধিকারের তালিকা থেকে বাদ পড়ে একটি সাধারণ আইনগত অধিকারে পরিণত হয়েছে। ফলে সংবিধানের সন্নিবিষ্ট মৌলিক অধিকারের সংখ্যা বর্তমানে ছয়টি, যেগুলি নীচে সংক্ষিপ্ত আকারে বিবৃত করা হল
১) সাম্যের অধিকার (১৪-১৮ নং ধারা) : (ক) আইনের দৃষ্টিতে সাম্য, (খ) জাতি, ধর্ম বর্ণ জন্মস্থান, স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে বৈষম্যমূলক আচরনের নিষিদ্ধকরণ, (গ) সরকারী চাকুরীতে সকলের সমানাধিকার, (ঘ) অস্পৃশ্যতা নিষিদ্ধকরণ এবং (ঙ) খেতাবের অবলুপ্তি এই মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভূক্তি।
২) স্বাধীনতার অধিকার (১৯-২২ নং ধারা) :- এই অধিকারের মধ্যে ৬টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে- (ক) বাক্য ও মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা, (খ) শাস্তিপূর্ণ ও নিরস্ত্র ভাবে সমবেত হওয়ার অধিকার, (গ) সমিতি বা সংঘ ঘটনের অধিকার, (ঘ) ভারতের সর্বত্র স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকার, (ঙ) ভারতের যেকোন স্থানে বসবাস করার অধিকার এবং (চ) যে কোনো বৃত্তি বা পেশা গ্রহনের বা ব্যবসাবাণিজ্য চালানোর অধিকার।
৩) শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার (২৩ ও ২৪নং ধারা) :- এই অধিকারের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলি হল- (ক) বল প্রয়োগের দ্বারা শ্রম দানে বাধ্য করা, মানুষের ক্রয় বিক্রয় ও বেগার শ্রমিক ঘাটানোর উপর নিষেধাজ্ঞা এবং (খ) খনি বা বিপজ্জনজনক কাজে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু শ্রমিকদের নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা।
৪) ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার ( ২৫-২৮ নং ধারা) :- ধর্ম নিরপেক্ষতার স্বার্থে এই অধিকার ৪টি বিষয়ের উল্লেখ করেছে – (ক) প্রত্যেকের বিবেকের স্বাধীনতা অনুসারে ধর্ম স্বীকার, ধর্মাচরণ ও ধর্ম প্রচারের স্বাধীনতা প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ধর্ম প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও রক্ষনাবেক্ষনের স্বাধীনতা এবং এই সুত্রে স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির অর্জন, দখল ও পরিচালনার অধিকার, (গ) ধর্মীয় কারনে কর না দেওয়ার স্বাধীনতা এবং (ঘ) সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলক ধর্মীয় শিক্ষা নিষিদ্ধ করন।
৫) সংস্কৃতি ও শিক্ষা সংক্রান্ত অধিকার (২৯-৩০ নং ধারা) এই অধিকারের মধ্যে আছে- (ক) নাগরিকদের সব সম্প্রদায়ের নিজ নিজ ভাষা সংস্কৃতি ও লিপি ব্যবহারের অধিকার এবং (খ) সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনার অধিকার।
শাষনতান্ত্রিক প্রতিবিধানের অধিকার (৩২-৩৫ নং ধারা) :- ব্যক্তির মৌলিক অধিকারগুলি লঙ্ঘিত হলে – (ক) বন্দী প্রত্যক্ষীকরণ, (খ) পরমাদেশ, (গ) প্রতিষেধ, (ঘ) অধিকার প্রচ্ছা ও (ঙ) উৎশ্লেষণ এই পাঁচটি লেখ-র মধ্যে প্রয়োজন মত লেখটি জারীকরে লঙ্ঘিত অধিকারটি
পুনুরষ্কারের জন্য ব্যক্তি সরাসরি সুপ্রীমকোর্টের কাছে প্রতিকার- প্রার্থনার অধিকারের কথা এই মৌলিক অধিকারে বলা হয়েছে।