একটি ভ্রমণের অভিজ্ঞতা রচনা
ভূমিকা –
ভ্রমণ করতে কার না ভালো লাগে।অনেক দূর ভ্রমণে যেতে আমাদের অনেকের মনের প্রবল ইচ্ছা। কিন্তু নানা অসুবিধার কারণে আমরা অনেক সময় দূরের ভ্রমণে যেতে পারি না।
দূরের ভ্রমণে না যাওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে তারা টাকা-পয়সার অভাব।
আমরা সকলেই পিসির বাড়ি মাসির বাড়ি মামার বাড়ি অথবা যেকোন আত্মীয়স্বজনের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছি।
কিন্তু দূরের কোনো ভ্রমণ আমাদের সকলের কাছে অনেক দিনের আশা আকাঙ্ক্ষা। তাই আমরা সকলেই চাই দূরের কোনো ভ্রমণে যেতে এবং সেখানে গিয়ে আমরা আনন্দ ও সেই জায়গাটিকে উপভোগ করতে চাই।
অচেনাকে চেনা ও অজানাকে জানার জন্যই তো মানুষ বেরিয়ে পড়ে আর সেই সূত্রেই ভ্রমণের অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে মধুর।
ভ্রমণের গুরুত্ব :
বর্তমান কাল হল বিজ্ঞানের যুগ আর এ যুগে মানুষ দৈনন্দিন জীবনে বৈচিত্রহীন একঘেয়েমিতে কাটায়।
তার এই একঘেয়েমি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য মানুষের মনে ভ্রমণের তাগিদ প্রচন্ডভাবে বেড়ে যায়।
তাই ভ্রমণ পিপাসা মানুষেরা অচেনাকে চেনা ও অজানাকে জানার জন্য তারা পৃথিবীর উদ্দেশ্যে ভ্রমণের জন্য অভিজ্ঞতা লাভের জন্য বেরিয়ে পড়ে।
ভ্রমরের মধ্য দিয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ পৃথিবীর মানুষের সঙ্গে পরিচিত হয়ে তাকে আপন করে নেওয়ার মনোবৃত্তি জন্মায়।
দীর্ঘদিন সীমিত গণ্ডির মধ্যে মানুষেরা আবদ্ধ থাকার ফলে মানুষের মনে সংকীর্ণতায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়।
তাই ভ্রমণ মানুষের মনের সেই সংকীর্ণতা ও মানসিক জনতাকে দূর করে। তাই যেকোনো ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আর গুরুত্ব আমাদের সকলের কাছে অপরিসীম।
ভ্রমণের জন্য প্রস্তুতি :
গত গ্রীষ্মকালে শিলং ভ্রমণ এর অভিজ্ঞতা আমার স্মৃতিতে অম্লান হয়ে আছে।
গ্রীষ্মকালের শুরুতেই যখন বাবা আমাদের সকলকে জানালেন যে বার্সেলোনা রাতে যাব তখন আমরা সবাই আবেগ ও উত্তেজনায় অধীর হয়ে উঠি।
আর আবেগ ও উত্তেজনার সাথে আমরা অপেক্ষা করছিলাম সেই দিন কবে আসবে শেষ অব্দি সমস্ত কিছু গুছিয়ে নিয়ে মে মাসের এক সকালে গোয়াহাটি ট্রেনে চেপে বসলাম।
ভ্রমণের অভিজ্ঞতা :
শিলিগুড়িতে থেকে ট্রেনে নেমে বাসে চেপে বসলাম ৮৬ কিমি দূরে শিলং যাবার উদ্দেশ্যে। আর পাঁচটা পাহাড়ি শহর অর্থাৎ কুলু, মানালি, সিমলা, দার্জিলিংয়ের থেকে আলাদা ছিল। শিলং পৌঁছে যা দেখলাম তা আশা করি জীবনে ভোলা যাবে না।
শহরের একদিকে রয়েছে সুইট ফলস আর অন্যদিকে পাহাড়ের গা বেয়ে নেমেছে জোড়া ঝরনা যেন জমজ ভাই। ঝরনা দেখে আমরা সকলে খুব আনন্দিত হয়েছিলাম এবং ঝরনা ঠেকিয়ে দারুণভাবে উপভোগ করেছিলাম।
আমরা গিয়েছিলাম শিলং পিঠ রেলিং বাঁধানো প্রায় সমতল পাহাড়ের চূড়া যা শিলং এর সবথেকে বেশি উঁচু ভিউ পয়েন্ট।
সেখান থেকে দেখা যায় শিলং শহর, খেলনার মতো ছোট ছোট বাড়ি আর বাগান, চোখে পড়ে সবুজ ঘাসে ভরা অন্তহীন এক সমুদ্র।
এরপরে আমরা সবাই মিলে গেলাম শিলং এর কাছে চেরাপুঞ্জিতে যেখানে সব সময় বৃষ্টি ঝরে আত্মার সঙ্গে রয়েছে অজস্র সুন্দর ঝর্ণাধারা।
এই চেরাপুঞ্জি কে নিয়েই কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত লিখেছিলেন ” চেরাপুঞ্জি থেকে একখানা মেঘ ধার দিতে পারো…”।
এরপর আমরা গেলাম লিভিং রতে এটা একটা কুমারী বন কারণ এ পর্যন্ত কোনো কাঠুরে বা চোরাশিকারির হাত ছুঁতে পারেনি এই বনকে।
এই বনের অদ্ভুত কাহিনী শুনে আমরা সবাই অবাক হয়েছিলাম।
সর্বশেষে বলতে গেলে শিলংয়ের এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে আমাদের সকলের মন ভরে গিয়েছিল ও তার সাথে আমাদের সকলের চোখ জুড়িয়ে গিয়েছিল।
উপসংহার:
শিলং এর সৌন্দর্য উপভোগ করার পর আমরা সকলে নির্দিষ্ট সময়ে ফিরে এসে বাড়ির পথে রওনা জন্য গাড়ি ধরতে হলো কিন্তু ওই হৃদয় জুড়ে হয়ে গেল শিলং ভ্রমণের স্মৃতি।
এখনো মনে পড়ে সেই ঝর্ণার সৌন্দর্য, লেকের অপূর্ব মাধুর্য, সেখানকার লোক সংস্কৃতি এবং সর্বোপরি ” শেষের কবিতা ” এই উপন্যাসের স্মৃতিবিজড়িত স্থান এর প্রকৃতি।