চর্যাপদের মধ্যে সমকালীন সমাজ-চিত্রের যে পরিচয় পাওয়া যায়, তা আলোচনা করো।

চর্যাপদের সমকালীন সমাজ-চিত্র:

    বিশুদ্ধ সাহিত্য সৃষ্টির উদ্দেশ্য নিয়ে চর্যাপদ রচিত না হলেও চর্যাপদের কবিগণ বাস্তব জীবনের বিভিন্ন চিত্র কে রুপক হিসাবে ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন চার্জার পদগুলিতে। সমাজের বিভিন্ন রীতিনীতি সংস্কার সাহিত্যের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসে। প্রাচীন যুগের সময় কালে বাংলার জনজাতি বিভিন্ন শত্রুর দ্বারা আক্রান্ত হলে সে কাহিনী যে কোন সাহিত্যে উঠে আসবে না তা কখনো হতে পারে না।

    এই কারণেই খুব স্বাভাবিকভাবেই সমাজের বিভিন্ন ঘটনা  চর্যাপদ এর বিভিন্ন পদে বারবার উঠে এসেছে। যদিও থাকে বৌদ্ধ সহজিয়া পন্থীরা দ্ব্যর্থবোধক ভাষায় পদগুলিতে উল্লেখ করেছেন তবুও তার মধ্যে আমরা চর্যাপদের সমকালীন সমাজ জীবন কে পরিস্কার ভাবে উপলব্ধি করতে পারি। চর্যাপদ গুলিতে সেই সময়কার সমাজ জীবনের যেসকল রীতিনীতি প্রথা ধরা পড়েছে সে গুলি সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো –

বর্ণভেদ :  চর্যাপদের পদ গুলিতে নিম্নবর্গীয় মানুষের জীবনযাপন সংক্রান্ত তথ্যই বেশি প্রতিফলিত হয়েছে। নিচু জাতি রা যেমন ডোম, শবর ইত্যাদি চর্যাপদ এর স্থান পেয়েছে ঠিক তেমনভাবে উচু জাতির কথাও চর্যাপদ বিবৃত করা হয়েছে। চর্যাপদ থেকে জানা যায় নিচু শ্রেণীর মানুষেরা সমাজের উঁচু স্তর থেকে দূরে বসবাস করত। এমনকি তারা পাহাড়ের ঢালে ঘর বেঁধে বসবাস করত। সমাজের উঁচু বর্ণের মানুষেরা এইসব নিম্নবর্ণের মানুষদের ছোঁয়া বাঁচিয়ে চলার চেষ্টা করত।

জীবিকা : প্রাচীন বাংলার মানুষের যে কয়েকটি জীবিকার উল্লেখ আছে এই গ্রন্থে তা হল – তাঁত বোনা, চাঙ্গারি তৈরি, পশু শিকার করা, নৌকা বাওয়া, মাছধরা, মদ তৈরী জঙ্গলের গাছ কাটা প্রভৃতি।

আহার্য :  চর্যাপদের সমাজ ও আজকের দিনের সাধারণ বাঙালি সমাজের মত ছিল তা সেই সময়কার খাবার-দাবারের পরিচয় জানলে খুব সহজেই বোঝা যায়। তখনকার দিনে প্রধান খাদ্য হিসাবে ভাত ছিল। আর দুধ মাছ ও মাংসের উল্লেখ পাওয়া যায় বিভিন্ন চর্যাপদ এর মধ্যে।

বিনোদন :  বিভিন্ন চর্যাপদে বারবার বিনোদনের বিষয়টিকে দেখা গেছে। সমাজ জীবনে যেমন দুঃখ ছিল কষ্ট ছিল ঠিক তেমনি এই বিনোদন থেকে দেখে মনে করা হয় তারা সমাজ জীবনের মধ্যে সবকিছু সঙ্গে বিনোদন কেউ এক করে নিয়েছিল। সেকালে মাদল, পটোহ, ডমরু, বাঁশি,একতারা, বীণা প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্র ছিল। অবসর বিনোদনের জন্য নব বল বা দাবা খেলা হতো।

দৈনন্দিন উপকরণ :  সেকালের একান্নবর্তী পরিবার গুলির দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় উপকরণ রূপে ব্যবহৃত হতো কুঠার, আয়না, তালা চাবি, হারি প্রভৃতি।

উৎসব অনুষ্ঠান :   চর্যাপদ এর যুগে বাজনা বাজিয়ে বরের বিবাহ করতে যাওয়ার প্রচলন ছিল। এমনকি যৌতুক প্রথার উল্লেখ পাওয়া যায়। সামাজিক উৎসব অনুষ্ঠানের অঙ্গ হিসাবে নাচ গান ও অভিনয়ের প্রচলন ছিল। একটি পদে নাটকের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

চৌর্যবৃত্তি : আলো-আঁধারি ভাষায় চর্যাপদ এর কয়েকটি পদে বিভিন্ন ভাবে চুরি মূলক আলোচনা করা হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় সেই সময়কার দিনেও চোর ডাকাতের উপদ্রব ছিল।

ভাষার পরিবর্তনঃ চর্যাপদ এবং সম্কৃতির একটি অংশ হিসেবে একে অন্যের সাথে সংবাদ ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ সাধারিত করে। এটি ভাষার ব্যবহারের পরিধিতে পরিবর্তন আনে এবং ভাষার বৈচিত্র্যবাদে মৌলিক পরিবর্তন হয়েছে।

সাংস্কৃতিক প্রভৃতির পরিবর্তনঃ চর্যাপদের মাধ্যমে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রভৃতি পরিবর্তন হয়েছে, এবং সমকালীন চর্যাপদ এই পরিবর্তনের সাথে মিলেপে থাকে।

সমকালীন চর্যাপদ সমাজকে একত্রিত করতে এবং আধুনিক বিশ্বের সাথে সামরিক, আর্থিক, এবং সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের সাথে অবিরাম সম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করছে। সমকালীন চর্যাপদ মাধ্যমে সমাজের সকল উপাধির সাথে একত্রিত হতে সাহায্য করে এবং আধুনিক বিশ্বমন্ত্রণা, প্রযুক্তিগত উন্নতি, এবং মানবাদের

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Discover more from

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

Why national building regulations. Gpj nxtgen infrastructure private limited. Garden rooms dm developments north west.