স্বাস্থ্য শিক্ষার নীতি (Principles of Health Education) :-
১. আগ্রহের নীতি :-
একটি সর্বজনীন স্বীকৃত সত্য হল এই যে মানুষের যে বিষয়ের প্রতি আগ্রহ থাকে মানুষ সেই কথাই শুনতে চায়। তাই স্বাস্থ্য বিষয়ক শিক্ষাদান ও স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মসূচির পদ্ধতি সমূহ এমন রূপে গঠন করা উচিত যেন এগুলোর মাধ্যমে মানুষের আগ্রহের বৃদ্ধি পায়।
২. প্রকৃত স্বাস্থ্য চাহিদার নীতি :-
মানুষের প্রকৃত চাহিদা সম্পর্কে না জেনে কোনো স্বাস্থ্য কর্মসূচি রূপায়ণ করা উচিত নয়। মানুষের প্রকৃত স্বাস্থ্য চাহিদা অনুসারে কর্মসূচি রূপায়ান করলে তাতে মানুষ সানন্দে অংশগ্রহন করে। অর্থাৎ কর্মসূচি সর্বদা চাহিদা ভিত্তিক হওয়া চাই।
৩. বাস্তবতার নীতি :-
স্বাস্থ্য শিক্ষা কখনই কৃত্রিম ভাবে দেওয়া যায় না, এটি সর্বদাই বাস্তবসম্মত হওয়া দরকার। রীতিবদ্ধ শিক্ষণ-শিখণ পদ্ধতির মাধ্যমে স্বাস্থ্যশিক্ষা দেওয়া যায় না।
4. জানা থেকে অজানার নীতি :-
স্বাস্থ্য শিক্ষার কর্মসূচি সর্বদা জানা থেকে অজানার উদ্দেশ্য হওয়া দরকার। এটি শুরু হওয়া উচিত জনগণের জানা অভ্যাস বা মনোভাবে মধ্য দিয়ে এবং ধীরে ধীরে তাদের বিভিন্ন অজানা আচরণে অভ্যস্ত করা দরকার।
৫. সমাজের মধ্যে উপস্থিত সংস্কৃতি উপলদ্ধির নীতি :-
স্বাস্থ্য শিক্ষা দিতে গেলে প্রথমেই সমাজের সংস্কৃতি অনুধাবন করা দরকার এবং তারপর সেই সংস্কৃতি অনুসরন করে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য শিক্ষার মহান আদর্শ ছড়িয়ে দেওয়া দরকার।
৬. সক্রিয় অংশগ্রহনের নীতি :-
স্বাস্থ্য শিক্ষার শিক্ষণ-শিখন কর্মসূচি রূপায়ানের অন্যতম প্রধান হল সক্রিয় অংশগ্রহন। দলগত আলোচনা, কর্মশালা, পথসভা প্রভৃতি সংগঠনের মাধ্যমে মানুষকে স্বাস্থ্যের ও ঋণাত্মক দিকগুলি সম্পর্কে সহজেই জ্ঞাত করা যায়। মানুষ এই কর্মসূচি গুলিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করতে পারে।
৭. সহজ – সরল প্রবর্তনের নীতি :-
স্বাস্থ্য শিক্ষাকে ব্যক্তির জ্ঞান-বোধ, শিক্ষাগত যোগ্যতা, মানসিক ক্ষমতা ও অক্ষরজ্ঞানের মাত্রা অনুসারে প্রবর্তন বা উপস্থাপন করা দরকার। এর ভাষা হবে সহজ-সরল যাতে সকল শ্রেণির মানুষ এটির সঙ্গে একাত্ম হতে পারে।
৮. মুক্ত আদান-প্রদানের নীতি :-
স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মসূচির সাফলা উন্মুক্ত জনসংযোগ বা ভাবের আদান-প্রদানের ওপর নির্ভর করে। স্বাস্থ্য শিক্ষায় শিক্ষককে শিক্ষাদান করে চুপ-চাপ বসে থাকলে হবে না, তিনি সর্বদা তাদের মতামত গ্রহন করে দুর্বলতা ও প্রশ্নের নিরশন করতে সচেষ্ট হন।
৯. কাজের মাধ্যমে শিক্ষার নীতি :-
স্বাস্থ্যশিক্ষার কর্মসূচি কর্মের মাধ্যমে শিক্ষন নীতির ওপর নির্ভরশীল হওয়া দরকার। এই শিক্ষা হবে ব্যবহারিক । ধনাত্মক প্রকৃতির যাতে ব্যক্তি অংশগ্রহনের মাধ্যমে শিক্ষা লাভ করে।
১০. দল বা গোষ্ঠীর নীতি :-
স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মসূচি গুলিতে ব্যক্তিকে এককভাবে অংশগ্রহন না করিয়ে তার পরিবার, গোষ্ঠী, গ্রাম প্রভৃতি বৃহত্তর অংশকে দলবদ্ধ আকারে অংশ গ্রহন করতে পারলে সর্বাধিক ফলাফল লাভ করা যায়।
৯ মূল্যায়নের নীতি :-
স্বাস্থ্য শিক্ষাও মূল্যায়নের বাইরে নয়। প্রতিনিয়ত এই শিক্ষার উপযোগিতা ও কার্যকারিতার বিষয়ে মূল্যয়ন করা দরকার। নিয়মিত ও ধারাবাহিক মূল্যায়নের এর পরিবর্তন বাঞ্ছনিয়।